Thursday, July 25, 2024
Homeবাংলাদেশশরীফের চাকরিচ্যুতির বৈধতার চেষ্টায় দুদক

শরীফের চাকরিচ্যুতির বৈধতার চেষ্টায় দুদক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সদ্য চাকরিচ্যুত উপসহকারী কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত আছে। এই আলোচনা-সমালোচনা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছে দুদকও। এমনও শোনা যাচ্ছে, চাকরিচ্যুতির ‘বৈধতা’ প্রমাণে শরীফের বিরুদ্ধে দুদক পাঁচটি অভিযোগ আনতে যাচ্ছে।

একটি অভিযোগ হলো, আদালতের অনুমোদন ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের একটি হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা, যাকে দুদক অসদাচরণ বলে অবহিত করছে। দ্বিতীয় অভিযোগ হলো, কক্সবাজারে র‌্যাবের অভিযানে জব্দ করা ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রাখা; তৃতীয় অভিযোগ, পটুয়াখালী জেলায় বদলি আদেশের ওপর হাইকোর্টে রিট ও নির্ধারিত সময়ের একমাস পর নতুন কর্মস্থলে যাওয়া। চতুর্থ অভিযোগ হলো, পুরনো কর্মস্থলের কোনো নথি বুঝিয়ে না দিয়ে নতুন কর্মস্থলে যাওয়া এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় কাজ করার সময় ঘুষ দাবি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানির অভিযোগও আনা হতে পারে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার এসব অভিযোগের আভাস দিয়েছিলেন দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন মো. শরীফ উদ্দিন। জব্দকৃত আলামত প্রসঙ্গে তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ৯৩ লাখ টাকা কোষাগারে জমা রাখা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। সরকারি ট্রেজারি বা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখতে গেলে জানা যায়, আলামতের টাকাগুলো কাপড় মুড়িয়ে ট্যাংক বা বাক্সে ভরে জমা দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে জমাগ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ একটি বাক্স বা ট্যাংক বুঝে পেলাম মর্মে গ্রহণ করবেন। বাক্স বা ট্যাংকের ভেতর কী কী আছে বা কী পরিমাণ আছে, সেটা উল্লেখ করেন না; এটাই নাকি তাদের নিয়ম। শরীফ উদ্দিন বলেন, এতগুলো টাকা এভাবে প্রমাণ অথবা কাগজ ও রেকর্ড ছাড়া জমা রাখার পক্ষপাতি ছিলাম না।

তিনি বলেন, অন্য একটি উপায় বাংলাদেশ ব্যাংকে ছিল, যা তাদের বিবিধ হিসাব খাতে জমা করা যেত এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সেই জব্দকৃত আলামতের টাকা বাজারে বিতরণ করত। সে ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়ার সময় ওই জব্দকৃত টাকা বিজ্ঞ আদালতে দেখানো সম্ভব হতো না। মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হতো, আসামি তাতে লাভবান হতেন।

তবে জব্দকৃত আলামত তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে রাখার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই দাবি করে তিনি বলেন, কোনো আইন বা বিধিতে স্পষ্ট করে লেখা নেই যে, জব্দকৃত আলামতের টাকা অবশ্যই কোষাগারে জমা রাখতে হবে। এমন বাধ্যবাধকতা নেই। শরীফ উদ্দিন দাবি করেন, জব্দকৃত আলামতের টাকা তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজের কাছেই রাখেন- এমন নজির দুদকে অনেক আছে।

চাকরিতে দেরিতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৩০ জুন থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত এ ব্যাপারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল। এর পর আমি কোভিডে আক্রান্ত ছিলাম। তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নিয়মগুলোও ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, কিছু নথি সিডি আকারে প্রস্তুত করা হচ্ছিল, যা হস্তান্তর ছিল সময়সাপেক্ষ।

তবে সর্বশেষ কর্মস্থল থেকে কাউকে হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, উল্টো তার বিরুদ্ধে অনেকে দুদকে লিখিত অভিযোগ করেন। তাদের মধ্যে আছেন, কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আইয়ুব খান, বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, রোহিঙ্গা নাগরিক মো. তৈয়ব, কক্সবাজারের মো. ইদ্রিস প্রমুখ।

তিনি দাবি করেন, যারাই আমার বিরুদ্ধে নানাভাবে অভিযোগ করেছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তারা সবাই আমার দায়ের করা মামলার অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট।

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular