ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থে পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দু-খ্রিস্টান এমনকি মুসলিমদের বিরুদ্ধেও ধর্ম অবমাননা (ব্লাসফেমি) আইনের মারাত্মক অপব্যবহার হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম। এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য রিপোর্ট।
পাকিস্তানের স্থানীয় দৈনিক বিজনেস রেকর্ডার জানিয়েছে, পাকিস্তান সফর শেষে ক্যান্টাবেরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবে জানিয়েছেন, পাকিস্তান উত্তরাধিকার সূত্রে ব্রিটিশদের কাছ থেকে ব্লাসফেমি আইন পেয়েছে। যা জিয়াউল হকের শাসনামল থেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ব্যবহৃত হয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনের খুব স্পষ্ট অপব্যবহার হচ্ছে। তবে মুসলমানরাই অন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই আইনের বেশি অপপ্রয়োগ করছে।’
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ব্লাসফেমির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু দেশটিতে যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলা হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই ব্যক্তিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন হত্যা করে ফেলে। আসলেই তারা ধর্ম অবমাননা করেছিলেন নাকি ষড়যন্ত্রের শিকার, সেটি জানা সম্ভব হয় না।
কিছুদিন আগে দেশটিতে একজন শ্রীলঙ্কান নাগরিককে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পিটিয়ে হত্যা করে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে ওই ব্যক্তির মরদেহে আগুন ধরিয়ে তার সঙ্গে সেলফি তোলার ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
এ ছাড়া ব্লাসফেমির অভিযোগে কেউ কারাগারে গেলে আইনজীবীরা নিজেদের জীবনের ভয়ে আইনি লড়াইয়ে যেতে রাজি হয় না। ফলে কোনরকম বিচার ছাড়াই বছরের পর বছর জেলে বন্দি থাকতে হয় তাদের।
সম্প্রতি মুলতানে একজন আসামির আইনজীবীকে খুন করা হয়েছে। এর আগে অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত একজন খ্রিস্টান ব্যক্তিকে খালাস দেওয়ার জন্য চেম্বারেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল লাহোর হাইকোর্টের একজন বিচারপতিকে। ফলে অনেক সময় নিম্ন আদালতের বিচারকরা সাক্ষ্য-প্রমাণ যাচাই না করেই অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেন।