Sunday, September 8, 2024
Homeবাংলাদেশনিপাহ ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণা

নিপাহ ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণা

মুরাদ হোসেন লিটন : নিপাহ ভাইরাসের টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশে নতুন গবেষণা শুরু করছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। সংস্থাটির নেতৃত্বে নরওয়ের দ্যা কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের (সেপি) অর্থায়ন ও সমর্থনে এ গবেষণা শুরু হতে যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আইসিডিডিআর’বির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়া ৫০ জনের বেশি মানুষ এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করবে। যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে আগের নিপাহ প্রাদুর্ভাবের কারণে ভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চিহ্নিত করা এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে তার পরিবর্তন হয় তা জানার চেষ্টা করা। এই নতুন তথ্য ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং টিকার জন্য টুলস তৈরি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে।

সেপি’র গবেষণা ও উন্নয়ন শাখার নির্বাহী পরিচালক ডা. মেলানি স্যান্ডিল বলেছেন, চলমান কোভিড সংকট থেকে আমরা বুঝতে পারি, যারা সংক্রমিত হয়েছেন তাদের শরীরে ওই ভাইরাস কীভাবে কাজ করে বা এই ভাইরাস শরীরে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। এ ধরনের তথ্য ভ্যাকসিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ভ্যাকসিন গবেষণায় আইসিডিডিআর,বি পাঁচ দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। কলেরা, টাইফয়েড, রোটাভাইরাস, হাম, পোলিও, নিউমোনিয়া, ডেঙ্গু, এইচপিভিসহ অনেক ভ্যাকসিনের উন্নয়ন ও লাইসেন্স অর্জনে প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ অবদান রেখেছে। আমরা প্রাণী থেকে মানুষে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায় শনাক্তকরণ, রোগের কারণ অনুসন্ধান, সংক্রমণের গতি ও প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করতে বিশ্বের দীর্ঘতম নিপাহ ভাইরাস সার্ভিল্যান্স পরিচালনা করছি।

ইউকে মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট রেগুলেটরি এজেন্সির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মার্ক বেইলি বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও অন্যান্য রেফারেন্স ম্যাটেরিয়াল তৈরিতে আইসিডিডিআর,বি’র সহযোগিতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, নিপাহ ভাইরাস মানুষকে সংক্রমিত করার জন্য সবচেয়ে মারাত্মক প্যাথোজেনগুলির মধ্যে একটি। টেরোস বাদুড়ের মাধ্যমে ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও সংক্রমিত শূকর, সংক্রামিত মানুষ অথবা বাদুড়ের কামড়ানো ফল বা খেজুরের রসের মতো দূষিত খাবারের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ফলে মানুষ দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং শ্বাসতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে মারাত্মক প্রভাবিত করে। এর ফলে, মৃত্যুর হার ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। ১৯৯৮ ও ৯৯ সাল থেকে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে এটি শনাক্ত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ, ভারত ও ফিলিপাইনে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular