বিশ্ব অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব, দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

0
141

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার এক মাস পূর্ণ হতে যাচ্ছে আর দু’দিন পর। চার কোটি ৪০ লাখ মানুষের পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলার সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ ইউক্রেন রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এর পর এই এক মাসে ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিউপোল, খারকিভসহ নানা অঞ্চল বোমাবর্ষণে তছনছ হয়ে গেলেও এখনো দেশটিকে নিজেদের আয়ত্তে আনতে পারেনি রাশিয়া। উল্টো পশ্চিমা অস্ত্র-সাহায্য নিয়ে ইউক্রেন সেনারা বিশ্বের দ্বিতীয় সামরিক শক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

গতকাল বুধবারও দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা ও পাল্টা প্রতিরোধ অব্যাহত ছিল; সেই সঙ্গে হচ্ছে প্রাণহানিও। প্রায় এক মাসের এই যুদ্ধে কোনো পক্ষ এখনো চূড়ান্ত সফল না হলেও, বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়েছে এর মারাত্মক প্রভাব। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলোর দেওয়া একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় অর্থনৈতিকভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে রাশিয়া, যার প্রভাব পড়েছে দেশটির জনজীবনে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম ছুঁয়েছে রেকর্ড। খাদ্যপণ্যের দামও বাড়ছে হু হু করে। এ ছাড়া রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশই বিশ্বে গম, রাইয়ের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য ও সারের অন্যতম রপ্তানিকারক। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব পণ্যের রপ্তানিতেও প্রভাব পড়েছে। এমনিতেই কোভিড মহামারীর কারণে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ব অর্থনীতি রীতিমতো বিপর্যস্ত অবস্থা পার করছে। তার ওপর এই যুদ্ধ পরিস্থিতিকে এমন নাজুক করে তুলতে পারে যে, এর পরিণতি হতে পারে ধারণাতীত। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ বিশ্বনেতাদের হুশিয়ার করেছে, অনাকাঙ্খিত এই এই যুদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেকে আনতে পারে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ।

বিজনেস রেকর্ডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক মাসের যুদ্ধের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারে। কারণ রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী এবং রপ্তানিকারক দেশ। তাই যুদ্ধ শুরুর পর দেশটির তেল-গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে- এই আশঙ্কা থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে, যা এক পর্যায়ে ১৩৯.১৩ ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। এটি ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ইতোমধ্যে রাশিয়াকে দমাতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সে দেশ থেকে তেল-গ্যাস আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিল তেলের উৎপাদন বাড়াতে; কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকার কারণে পশ্চিমা এই আহ্বানে অতটা সাড়া দেয়নি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো, যা পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here