ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগও ছিল ডিপোর বিরুদ্ধে

0
78

ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগও ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হওয়া স্মার্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বিএম কন্টেইনার ডিপোর বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছরে প্রায় ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

জানা যায়, পোশাক ও সুতা খাতের স্মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান একাধিকবার সিআইপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ গ্রুপের প্রতিষ্ঠিত স্মার্ট জিন্স লিমিটেড, স্মার্ট জ্যাকেট বিডি লিমিটেড, সিহান স্পেশালিস্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, চিটাগাং ডেনিম মিলস লিমিটেড, বিএম কন্টেইনার ডিপো লিমিটেড, বিএম এনার্জি বিডি লিমিটেড, গ্লোব টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, সিটি হোমস প্রোপার্টিজ লিমিটেড, স্মার্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, স্মার্ট বায়োইনসেপশান লিমিটেড ও অ্যাপারেল প্রমোটারস লিমিটেডসহ ১৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে বিএম কন্টেইনার ডিপো লিমিটেড স্মার্ট গ্রুপ ও নেদারল্যান্ডসের একটি কোম্পানির যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবস্থিত বেসরকারি খাতের বিএম কন্টেইনার ডিপো লিমিটেড। স্মার্ট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পায় এনবিআর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআরের নির্দেশে মূসক নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর প্রতিষ্ঠানটি নিরীক্ষা করে।

প্রতিষ্ঠানটির ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার বরাবর প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু আয় রয়েছে যাতে ভ্যাট প্রযোজ্য। কিন্তু প্রতিষ্ঠান তথ্য গোপন করে আয় কম দেখিয়ে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন বছরে ভ্যাটযোগ্য সেবার আয়ের বিপরীতে প্রযোজ্য ভ্যাট প্রায় ১০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি মাসিক দাখিলপত্রে (ভ্যাট রিটার্ন) প্রায় ৮৫ লাখ টাকার ভ্যাট কম দেখিয়ে পরিশোধ না করে তা ফাঁকি দিয়েছে।

তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন খরচের বিপরীতে সঠিকভাবে উৎসে ভ্যাট কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। এ ছাড়া ভ্যাটযোগ্য সেবার আয়ের বিপরীতে উৎসে ভ্যাটসহ তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটি মোট প্রায় ১ কোটি ২ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট আইন অনুযায়ী, ফাঁকি দেওয়া ভ্যাটের ওপর ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দুই শতাংশ হারে সুদ প্রায় ৪৬ লাখ টাকা। সুদসহ প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করা হয়েছে।

অন্যদিকে স্মার্ট গ্রুপের আরেকটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট জিন্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১৪ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ পায় এনবিআর।

এদিকে ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন বলে মূসক গোয়েন্দার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠানের সঠিকভাবে কাগজপত্র পাওয়া গেলে ফাঁকির পরিমাণ আরও বেশি পাওয়া যেত বলে জানান তিনি। এ ছাড়া স্মার্ট গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান একইভাবে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here