Sunday, September 8, 2024
Homeফিচারবিআরটি প্রকল্প: সড়ক যেন মরণফাঁদ

বিআরটি প্রকল্প: সড়ক যেন মরণফাঁদ

বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলছে এক দশক ধরে। সড়ক-মহাসড়কের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে এ প্রকল্পের কাজ চললেও মানুষের কাছে এই মহাসড়কটি এখন আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। একের পর এক দুর্ঘটনায় আলোচনায় আসছে এ প্রকল্পটি।

সর্বশেষ গত ১৫ আগস্ট বিকালে একটি গার্ডার তোলার সময় এটির নিচে চাপা পড়ে একটি প্রাইভেটকারের পাঁচজন আরোহী নিহত হন। এর আগেও এখানে দুটি গার্ডার দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যাতে একজন নিহত হন। গত এক দশকে এ রকম বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে তিনটি। তবে এ সড়কে দুর্ভোগ নিত্যদিনের সঙ্গী। চলাচলকারীরা বলছেন, এ রকম দুর্ঘটনা দেখে পথ চলতে আতঙ্কে থাকেন তারা। এ প্রকল্পের কাজের কারণে মহাসড়কটি হয়ে উঠেছে এখন মরণফাঁদ।

বৃহস্পতিবার একেএম পলাশ নামের একজন বলেছেন, তিনি টঙ্গী বনমালা এলাকায় থাকেন। বিআরটি প্রকল্পের কাজের শুরু থেকেই ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার মানুষ। বাচ্চাদের স্কুলে নেওয়া-আনার সময় উৎকণ্ঠা নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে অভিভাবকদের। তিনি বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্পের কাজ করার সময় কোনো সিকিউরিটি থাকে না। ছাদ ঢালাইয়ের সময় নিরাপত্তাকর্মীদের কাউকে দেখা যায় না।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি উত্তরায় গার্ডার দুর্ঘটনার পরও টঙ্গীর কলেজগেট পাইলট স্কুল মার্কেটের সামনে একটি প্রাইভেটকারে ওপর থেকে রড পড়ে দুই শিশুসহ পাঁচ আরোহী অল্পের জন্য রক্ষা পান। ভাগ্যক্রমে তারা বেঁচে গেলেও তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি এখনও। বিআরটি প্রকল্পের গাফিলতির কারণে মহাসড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।’

শুক্রবার সকাল ৮টায় অফিসে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানোর লক্ষ্যে বাসা থেকে বের হন আবু বকর সিদ্দিক পারভেজ নামের এক যুবক। তাড়াহুড়ো করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী বাজার বাস স্টপেজ থেকে উত্তরায় জসীম উদ্দীনের উদ্দেশে একটি লোকাল বাসে ওঠেন তিনি। কিন্তু ওঠার পর ২০ মিনিট এক জায়গাতেই দাঁড়িয়েছিল বাসটি। বিশ কদমও এগোয়নি।

একপর্যায়ে হেঁটে আব্দুল্লাহপুরে যান। হেঁটে চলাচলেও দুর্ভোগে পড়েন তিনি। দেখেন আব্দুল্লাহপুরে বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণকাজের কারণে মাঝ সড়কে দুটি বড় পুকুরের মতো করে খোঁড়া হয়েছে। এ ছাড়াও টঙ্গী ব্রিজ থেকে আব্দুল্লাপুর প্রবেশমুখে বিশাল আকারে রড দিয়ে রোল বানিয়ে তা আড়াআড়িভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। এখান দিয়ে নিয়মিত বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। পারভেজ বলেন, ‘এখানে কোনো কারণে চালক একটু ভুল করলেই বড় দুর্ঘটনার শিকার হবেন। অনেক হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।’ শুধু টঙ্গী বা আব্দুল্লাহপুরই নয়, মহাসড়কের দুর্ভোগ, উৎকণ্ঠা গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে হযরত শাহ জালাল বিমানবন্দর এলাকার দুই পাশেই রয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই প্রকল্পের কাজের জন্য সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশকেও বেগ পেতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘খিলক্ষেত থেকে সিভিল অ্যাভিয়েশন পর্যন্ত পুরো সড়কে যানজট লেগেই থাকে। বিশেষ করে বলাকা ভবনের সামনে থেকে হাউস বিল্ডিং পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের কাজের জন্য রাস্তাগুলোর ভয়ঙ্কর অবস্থা। রাস্তার উভয় পাশে কাজ চলায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হন চালকরা।’ ওই ট্রাফিক পুলিশের ভাষ্য, এ প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুর্ভোগ চলবেই।

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular