Home খেলা ইউরো আধিপত্য ভাঙবেন নেইমার!

ইউরো আধিপত্য ভাঙবেন নেইমার!

0

গত দুই দশক ধরে বিশ্বকাপ শিরোপার বাইরে লাতিন আমেরিকা। বিশ্ব মঞ্চে যতই সময় গড়াচ্ছে ততই যেন বাড়ছে ইউরোপিয়ানদের দাপট। ২০১৮ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের চারটি দলই ছিল ইউরোপের। সর্বশেষ চার আসরের মধ্যে তিনটিতেই হয়েছে অল ইউরোপিয়ান ফাইনাল। সারা বছরজুড়েই আলোচনায় থাকে লাতিন ফুটবলাররা কিন্তু নক আউট পর্বে এসেই দম ফুরিয়ে যায় নান্দনিক ফুটবলের ঝান্ডাধারীদের।

২০০২ সালের এশিয়া (জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া) বিশ্বকাপে শেষবারের মতো শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল লাতিন ফুটবলের অন্যতম পুরোধা ব্রাজিল। এরপর গত দুই দশকে একবারের জন্যও ফাইনালের নাগাল পায়নি পাঁচবারের বিশ্বজয়ীরা। তবে এবার ব্যতিক্রম হবে বলেই মনে করছেন ২০০২ বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল অধিনায়ক কাফু। আর নেইমার টনিকে উদ্বুদ্ধ ব্রাজিল ইউরোপীয় আধিপত্য ভাঙবে এই বিশ্বাস কিংবদন্তি এই ব্রাজিলিয়ান ফুলব্যাকের।

বার্তা সংস্থা এফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সর্বকালের অন্যতম সেরা এই রাইটব্যাক বলেন, ‘আমি মনে করি ইউরো কর্তৃত্ব ভাঙার এটাই সুবর্ণ সুযোগ। দুঃস্বপ্নের ঘোর কাটিয়ে শিরোপা খরা দূর করার প্রকৃত সময়। এই বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মতো আর্জেন্টিনাও অন্যতম ফেবারিট।’ নিজ বক্তব্যের সমর্থনে কাফু বলেন, ‘আমি বলব দারুণ একটা সময় পার করছে ব্রাজিল। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে আসছে। একইভাবে চমৎকার একটা দল আর্জেন্টিনাও। আমার বিবেচনায় এই দুই দলেরই শিরোপা জয়ের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।’

ব্রাজিল দুই দশক শিরোপার বাইরে এর প্রভাব ব্যাপক বলেই মনে করেন কাফু। ভক্তরা বিষয়টাকে সহজভাবে নিতে পারে না, অনেক সময় হতাশা ভর করে এগুলো সবই মেনে নিয়েছেন সাবেক এই গ্রেট ফুলব্যাক। তবে ফর্মে থাকা নেইমার এবার সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাবে এই বিশ্বাস কাফুর। তার কথায়, দুই দশক শিরোপা না জেতায় ভক্তদের মনে গভীর প্রভাব পড়েছে। বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে আমি মনে করি, এবার বিষয়টা আলাদা। আমার বিশ্বাস নেইমার ফর্মে থাকলে শিরোপা জয়ের যথেষ্ট সুযোগ আছে ব্রাজিলের। কেননা নেইমার এমন একজন ফুটবলার যে একাই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন। তার প্রতিভার ওপর আমরা আস্থা রাখছি। তবে তার একার পক্ষে সব কিছু সম্ভব নয়। তার সমর্থন লাগবে। তবে আমি নিশ্চিত যে পুরো দলকেই নেইমার চাঙ্গা রাখতে পারবে।

গত এক দশক ধরেই ব্রাজিলের গোল আর নেইমার সমার্থক। তবে এই ব্রাজিলিয়ান গোলমেশিনকে নিয়ে বিতর্কেরও কোনো কমতি নেই। মাঠে অভিনয় করে ফ্রিকিক আদায় করার দুর্নাম এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে নেইমারকে। একটা সময় বিতর্কের কেন্দ্রে থাকতেন বিশ্ব ফুটবলের অহংকার দিয়েগো ম্যারাডোনা। মাঠেই শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে সব বিতর্ককে উড়িয়ে দিয়েছেন ম্যারাডোনা। তেমন কিছু কি নেইমার দেখাতে পারবেন কাতার বিশ্বকাপে? আশায় বুক বেঁধে আছেন ভক্তরা।

কাফুর একটা কথা কিন্তু খুবই দ্ব্যর্থবোধক। একা নেইমার বিশ্বকাপ জেতাতে পারবে না তার সমর্থন লাগবে, এই কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক কিছু। ২০০২ বিশ্বকাপের দলের সঙ্গে যদি বর্তমান ব্রাজিল দলটির তুলনা করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। আক্রমণভাগে রো-রো-রি (রোনালদো-রোনালদিনহো-রিভালদো) কম্বিনেশনের কথা না হয় বাদই দেওয়া গেল। ওই দলটিতে ফুলব্যাক হিসেবে ছিলেন দুই কিংবদন্তি কাফু ও রবার্তো কার্লোস। আর ফুলব্যাক পজিশনে বড় ধরনের দুর্বলতা দেখছেন অনেক ব্রাজিলিয়ান এক্সপার্ট। আর এই শূন্যতা পূরণে রাইটব্যাক হিসেবে দলে রাখা হয়েছে ৩৯ বছর বয়সি দানি আলভেজকে।

এ প্রসঙ্গে কাফু বলেন, ‘কেন এই পজিশনে প্লেয়ারদের ঘাটতি আছে আমি বুঝি না।’ এখনকার ব্রাজিল ফুলব্যাকদের তাদের সঙ্গে তুলনা করা প্রসঙ্গে কাফুর ভাষ্য, ‘এই তুলনা করাটা মোটেও উচিত হবে না। তবে আমি মনে করি, লেফট কিংবা রাইটব্যাকে যারা খেলবে তাদের অবশ্যই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা উচিত।’

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here