এই সময়ে রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায়ই মশার উপদ্রব বেড়েছে। কামড়ানোর পাশাপাশি কানের কাছে মশার ভনভন শব্দ বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন, শুষ্ক মৌসুমে আশপাশে জমা পানি কিংবা নালা-নর্দমা বা ডোবা না থাকার পরও এত মশা কোথা থেকে আসছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সময়ে মশার উপদ্রব বৃদ্ধির আসল কারণ হচ্ছে শীতের মৌসুমে কিউলেক্স মশার বংশবিস্তার বেশি হয়, যারা সবচেয়ে বেশি উড়তে পারে। ফলে দূরে কোথাও জন্ম নেওয়া মশাগুলো সহজেই বাসাবাড়ি, দোকানপাট, অফিস-আদালতে পৌঁছে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সহসাই মশার ‘গান’ বন্ধ হচ্ছে না।
এর মধ্যে মশার জীবনচক্র পরিবর্তন হয়েছে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা। আগে সেপ্টেম্বর মাসে এডিস মশা শূন্যতে নামলেও এ বছর ওই সময়ে ছিল সর্র্বোচ্চ পর্র্যায়ে। ধারণা করা হচ্ছে, এখন সেপ্টেম্বর নয়, নভেম্বর পর্যন্ত এডিস মশার প্রকোপ চলবে। এবার ডেঙ্গু মৌসুম দীর্ঘায়িত হওয়ার পর এখন শুরু হয়েছে কিউলেক্স মশার উপদ্রব। সাধারণত নভেম্বর মাস থেকে কিউলেক্স মশার বংশবিস্তার বাড়তে থাকে। সাধারণত, পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে। এডিস মশার ডিম এক বছর পর্র্যন্ত শুষ্ক অবস্থায় টিকে থাকতে পারে। বৃৃষ্টির পানি পেলে সেই ডিম থেকেই মশার জন্ম হয়। আর কিউলেক্স মশা জন্মায় ডোবা-নালা, খাল-বিল, ঝোপঝাড়, কুচুরিপানা ও বন্ধ জলাশয়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিউলেক্স মশা এডিস মশার মতো ডেঙ্গু রোগ বহন করে না। তাই কিউলেক্স মশা অতটা ভয়ানক না হলেও ম্যালেরিয়াসহ বেশকিছু রোগ ছড়াতে পারে। কিউলেক্স মশা সবচেয়ে বেশি উড়তে পারে বলেই শুষ্ক মৌসুমে পড়ার টেবিলে, মসজিদে, দোকানপাটে, অফিস আদালতে এরা ভনভন শব্দ করে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। কানের কাছে সারাক্ষণ মশার গান বাজতেই থাকে।
মশার উৎপাতে চরম বিরক্ত খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি একবার মেয়রদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমি মশার গান শুনতে চাই না। মশা মারতে হবে।’