কম্বোডিয়ায় মিঠাপানিতে ধরা পড়লো ৩০০ কেজি ওজনের মাছ

0
161

কম্বোডিয়ায় মিঠাপানিতে ৩০০ কেজি ওজনের একটি দানব আকৃতির মাছ ধরা পড়েছে। এটি বিশ্বে মিঠাপানির সবচেয়ে বড় মাছ বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল সোমবার কম্বোডিয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ গবেষণা প্রজেক্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, স্টিংগ্রে মাছটিকে গত ১৩ জুন ধরা হয়। এর মাথা লেজ পর্যন্ত চার মিটার (১৩ ফুট) লম্বা এবং এর ওজন কমপক্ষে ৩০০ কেজি। এর আগে ২০০৫ সালে থাইল্যান্ডে ২৯৩ কেজির (৬৪৬ পাউন্ড) এই ধরনের একটি ক্যাটফিশ ধরা পড়েছিল।

মাছটি স্থানীয়ভাবে ‘ক্রিস্টেনড বোরামি’ নামে পরিচিত। খেমার ভাষার এই শব্দের অর্থ ‘পূর্ণ চন্দ্র’। কারণ এই মাছটির গঠন অনেকটা পূর্ণিমার চাঁদের মতো। উত্তর-পূর্ব কম্বোডিয়ার মেকং নদীতে ওই স্টিংগ্রে মাছটিকে ধরা হয়েছিল। এটিকে নদীর পাড়ে তুলে আনতে এক ডজন মানুষ লেগেছিল।

রেনোর নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে জীব বিজ্ঞানী জেব হগান বলেন, ‘যখন তুমি এত বড় সাইজের একটি মাছ দেখবে এবং সেটা বিশেষ করে মিঠাপানিতে তখন এটার প্রজাতি বোঝা খুবই কঠিন। আমাদের পুরো দলটি হতবাক হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘স্টিংগ্রেটিকে দেখতে পাওয়া শুধু নতুন রেকর্ড নয়। এখনো মেকং নদীতে বড় মাছ বাস করতে পারছে এটাই বড় আশার কথা। যদিও নদীর জলপথ অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।’

মেকং নদীটি চীন, মিয়ানমার, লাউস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে।

বৈশ্বিকভাবে এখন বড় মাছ বিপন্ন। তারা গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি। এরা প্রাপ্তবয়স্ক হতে বেশ খানিকটা সময় নেয়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে তারা বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। বেশ সংখ্যক মাছ পরিযায়ী হওয়ায় তাদের জীবনধারণের জন্য বড় এলাকার প্রয়োজন। তারা কিনারা থেকে তাদের আবাসস্থল পর্যন্ত বিভ্ন্নি বিষয় নিয়ে প্রভাবিত এবং অবশ্যই অতিরিক্ত মাছ দ্বারাও তারা প্রভাবিত হয়। সুতরাং বৈশ্বিকভাবে ৭০ শতাংশ মিঠাপানির বড় মাছ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে এবং তারা বিলুপ্তির পথে। সঙ্গে দানব আকৃতির এই সবগুলো প্রজাতি।

হগান বলেন, দানব আকৃতির স্টিংগ্রে মাছটি খুব কম বোঝে। এর নাম, এমনকি এর বিজ্ঞানিক নাম গত ২০ বছরে কয়েকবার পরিবর্তন হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এটিকে প্রথম পাওয়া গেলেও এর সম্পর্কে আমরা প্রায় কিছুই জানি না। আমরা এর জীবন ইতিহাস সম্পর্কেও জানি না। আমরা এর বাস্তুতন্ত্র এবং পরিযায়ী ভ্রমণ নিয়েও কিছু জানি না।

গবেষকরা বলছে, গত দুই মাসের মধ্যে এটি চতুর্থ স্টিংগ্রে যেটা একই অঞ্চলে ধরা পড়েছে। তারা ধারণা করছেন, মাছগুলো হয়তো প্রজননের সময় ডিম ছাড়তে ওই অঞ্চলে গিয়েছিল। যে জেলে বোরামিকে ধরেছিল তিনি অতীতের রেকর্ড ভাঙ্গার সঙ্গে সম্মান ছাড়াও ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন। তিনি প্রায় ৬০০ ডলার পেয়েছিলেন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here