হারানোর ভয়ে ১১তম স্ত্রীকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন নুর

0
157

ময়মনসিংহের ফুলপুরে স্ত্রী হারানোর ভয়ে নিজের ১১তম স্ত্রীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে সঙ্গে নিয়েই ভিক্ষা করেন নুর ইসলাম (৭৫) নামের এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ফুলপুর উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের ধারকপুর গ্রামের।

জানা গেছে, নুর ইসলাম পেশায় একজন ভিক্ষুক। তিনি ভিক্ষা করতে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেড়ান। ১৫ বছর আগে মারা যায় তার প্রথম স্ত্রী। এই ১৫ বছরে এ পর্যন্ত ১০ জনকে বিয়ে করেন তিনি। তবে তন্মধ্যে ১০ জন স্ত্রীই মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় প্রথম ৯ জনই তাকে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। সবশেষে বছরখানেক আগে বিয়ে করেন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী জান্নাত বেগমকে (৩৫)। জান্নাতকে বিয়ে করার পর থেকেই হারানোর শঙ্কা জাগে তার মধ্যে। এ কারণে তাকে সারাক্ষণ একটি মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে নিজের সঙ্গে নিয়েই ঘুরে বেড়ান তিনি। এমনকি গৃহস্থালির কাজ ও ঘুমানোর সময়ও জান্নাতকে বেঁধে রাখেন নুর। এমন অদ্ভুত কাণ্ডের জন্য নুর ইসলামকে নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।

স্ত্রীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার কারণ জানতে চাইলে নুর ইসলাম বলেন, ‘একে একে ১০টি বিয়ে করার পরও বৃদ্ধ বয়সে কেউ তার সঙ্গে নেই। বৃদ্ধ বয়সে একা থাকতে চান না। ১১তম স্ত্রীও মানসিক ভারসাম্যহীন। যেকোনো সময় আগের স্ত্রীদের মতো সে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে পারেন, এমন শঙ্কা থেকেই স্ত্রী জান্নাতকে দড়ি দিয়ে বেঁধে সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন।’

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, নুর ইসলামের প্রথম স্ত্রী ছিলেন হাজেরা খাতুন। ১৫ বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি। নুর ইসলাম ও হাজেরা দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। হাজেরার মৃত্যুর পর মেয়েকে বিয়ে দেন নুর ইসলাম। কয়েক বছর আগে ছেলেও মারা যান। প্রথম স্ত্রী হাজেরা মারা যাওয়ার পর নুর ইসলাম পথে পথে ঘুরে ভিক্ষা শুরু করেন। নানা জায়গা ঘুরে ঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন কোনো নারী পেলেই তিনি বাড়ি নিয়ে আসতেন। আনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বিয়ে দিতেন। তবে কিছুদিন পরই মানসিক ভারসাম্যহীন সেই নারী নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এভাবে ৯ জন নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ার পর আনুমানিক এক বছর আগে ফুলপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আমুয়াকান্দা এলাকায় জান্নাত বেগমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে জান্নাতকেও নুর নিজের বাড়িতে নিয়ে যান।

ভাইটকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই নুর ইসলাম নিজেও কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে যান। এরপর তিনি নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীদের নিয়ে আসতেন নিজের বাড়িতে। এক বাড়িতে বসবাস করা অশোভন বলে স্থানীয় মানুষ তাদের বিয়ে করিয়ে দিতেন। কিন্তু আগের ৯ স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। তাই বর্তমান স্ত্রীকে তিনি সঙ্গে নিয়েই ঘোরেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here