রাজধানীর উত্তরখানে সহকারী আনসার অ্যাডজুটেন্ট মো. নাছির উল্লাহ খানকে ডাকাতিকালে হত্যার ঘটনার মামলায় দুই আসামিকে পৃথক দুই ধারায় ১০ বছর করে ২০ বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ১০ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। আজ বুধবার ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন-আরব আলী হাওলাদার ওরফে ডাকাত আলী এবং রহমান খাঁ। তাদের দণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার করে এক লাখ টাকা, অনাদায়ে তাদের ৬ মাস করে এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আসামিদের দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে। এজন্য তাদের ১০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করেন বিচারক।
খালাস পাওয়া ১০ আসামি হলেন-মিজান মোল্লা, নুরুল ইসলাম তালুকদার ওরফে গরু চোর নুরা, গোলাম মোস্তফা, ফজলুল করিম সরকার, রেজাউল বেপারী, জালাল খাঁ, সহি সর্দার, ইয়ামিন বেপারী, সালাম ও লিটন হাওলাদার।
রেজাউল করিম হাওলাদার ও শেখ আবু মামলা চলাকালে মারা যাওয়ায় তাদের আগেই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা বিষয়টি জানান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে ঢাকার উত্তর খান থানার মাউসাইদ (পূর্ব পাড়া) এলাকায় সহকারী আনসার অ্যাডজুটেন্ট মো. নাছির উল্লাহ খানের বসতবাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতদল বাড়ি ঘেরাও করে। পরে ঘরের বাইরে থেকে জানালা দিয়ে মো. নাছির উল্লাহ খানকে গুলি করে গুরুতর আহত করেন এবং ঘরের কেচি গেইটের তালা ও মূল দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে ডাকাতরা।
এরপর নাছির উল্লাহ খানকে আহত অবস্থায় চিৎকার দিতে থাকলে তার স্ত্রী আবেদা সুলতানা ও মেয়ে নুসরাত জাহান বৃষ্টি রুমে আসেন। তখন ডাকাতরা তাদেরও মারপিট করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। এ সময় ডাকাতরা আহত নাছির উল্লাহ খানকে পুনরায় ড্রয়িং রুমে গুলি করে ও ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ ৪০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল সেট ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় দুই লাখ ৭১ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতি করে।
পরবর্তী সময়ে গুরুতর আহত নাছির উল্লাহ খানকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহত নাছির উল্লাহ খানের ছোট ভাই মো. শামসুদ্দিন খান বাদী হয়ে উত্তর খান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তকালে আসামি শেখ আবুকে গ্রেপ্তার করে এবং তার কাছ থেকে ডাকাতির মালামাল মোবাইল সেট উদ্ধার করেন।
এ মামলার তদন্তকালে আসামি রেজাউল করিম, আসামি মো. সালাম, আসামি শেখ আবু, আসামি রহমান খা ও আসামি আরব আলী হাওলাদার আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তকাজ শেষ করে ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল ১৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত মামলার বিচারকালে ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।