ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযানে দেশটির নারীরা রাশিয়ার সেনাদের হাতে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। জাতিসংঘ এবং এর মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তর ইউএনএইচআরসিকে এমন অভিযোগ জানিয়েছে স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা লা স্ত্রাদা-ইউক্রেন। জাতিসংঘ অবশ্য এও জানিয়েছে, তাদের কাছে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার অভিযোগ জমা পড়ছে। খবর বিবিসি, আল জাজিরা ও সিএনএনের।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। প্রায় সব দিক থেকেই দেশটিতে হামলা চালালেও বর্তমানে মস্কোর মূল দৃষ্টি পূর্বাঞ্চলে। যুদ্ধ শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে বিবিসিও গতকাল এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখিয়েছে, রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের শিকার কয়েকজন নারী কীভাবে মুখ খুলেছেন।
লা স্ত্রাদা-ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কাতেরিনা চেরেপাখা এক অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেনে অন্তত ১২ জন নারী ও কিশোরী-তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার ওই নারী ও তরুণীদের নাম-বিবরণ অভিযোগে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাস্তবে রুশ সেনাদের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন নারীদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। আগ্রাসনকারী বাহিনীর সদস্যরা ধর্ষণকে তাদের অভিযানের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।’
তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধের সুযোগে রুশ ও ইউক্রেনীয়- উভয় বাহিনীর অনেক সদস্য ধর্ষণের ও যৌন সহিংসতার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। কর্মকর্তারা আরও জানান, ইউএনএইচআরসির প্রতিনিধিরা গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে উভয় দেশের সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও নাবালিকা ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছেন তারা। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইতোমধ্যে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
রুশ সেনারা আমাকে ধর্ষণ করেছে
কিয়েভ ও তার আশপাশের এলাকায় রুশ বাহিনীর ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন কয়েকজন নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে বিবিসি। আন্না (ছদ্মনাম) নামের ৫০ বছর বয়সী এক নারী কিয়েভ থেকে ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে একটি গ্রামীণ এলাকায় স্বামীসহ বসবাস করেন।
তিনি বলেছেন, ৭ মার্চ তার বাড়িতে জোর করে এক রুশ সেনা ঢুকে পড়ে। সে সময় স্বামীসহ বাড়িতেই ছিলেন তিনি।
আন্নার ভাষায়, ‘আমার দিকে রুশ সেনা বন্দুক তাক করে আমাকে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে নিয়ে যায়, সেটি তখন ফাঁকা ছিল। সেখানে গিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে।’ ওই সময় অন্য রুশ সেনারা তার স্বামীকে গুলি করে। দুদিনের মাথায় ওই ব্যক্তি মারা যান।